বাংলাদেশের জন্য রাশিয়া থেকে দুটি হেলিকপ্টার কেনা একটি বড় সমস্যায় পড়েছে। ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ২০২১ সালে, যখন সরকার দুর্গম এলাকায় সন্ত্রাস দমন ও নজরদারি বাড়ানোর জন্য এই বিমানগুলো সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছিল। তখন ১০ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদর দপ্তরে বাংলাদেশের পুলিশ এবং রাশিয়ান হেলিকপ্টার সংস্থার মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল দুটি হেলিকপ্টার বেসামরিক কাজে ব্যবহার হবে। এরপর, ২০২১ সালের অক্টোবরে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা এই কেনাকাকাটির অনুমোদন দেয়। বছর শেষে, নভেম্বরের মধ্যে ঢাকায় একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তিও সম্পন্ন হয়। তবে, এই হেলিকপ্টার দুটির জন্য পরিশোধ করা মোট ২৯৮ কোটি টাকা, এখন বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ান কোম্পানিগুলোর ওপর আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে থাকা এই নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশ এখন হেলিকপ্টারগুলো আনতে পারছে না। জানা গেছে, হেলিকপ্টার দুটির সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হলো জেএসসি রাশিয়ান হেলিকপ্টার্স। তারা গত ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলে বিমান পরিবহনের জন্য কার্গো ভাড়া করেছিল, কিন্তু এখন নিষেধাজ্ঞার কারণে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, এই চুক্তি করায় বর্তমান সরকার বিপদে পড়েছে। তারা কূটনৈতিক ও প্রশাসনিক দিক থেকে সমাধানের ভাবনা করছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্মকর্তারা বলছেন, দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে হেলিকপ্টারগুলো আনার আপাত সমাধান খুঁজে দেখা হচ্ছে, কারণ সরাসরি প্ল্যান নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অবস্থা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে, চুক্তি অনুযায়ী, চুক্তি ভেঙে দিলে বা হেলিকপ্টার না গ্রহণ করলে ব্যয় ও আইনি জটিলতা বাড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশ সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে কি করে এই রাশিয়ান হেলিকপ্টারগুলো দেশের কাজে লাগানো যায় বা এই বিষয়ের সমাধানের উপযুক্ত পথ খুঁজে পাওয়া।
