আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ হেরাতে একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের ভয়াবহ সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭১ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৭ জন শিশুও রয়েছে, যা এক বড় ট্রাজেডি। এ দুর্ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার সন্ধ্যার সময় হেরাতের গুজারা শহরে। স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, এ তথ্য এএফপি সংবাদ সংস্থাকে নিশ্চিত করেছেন হেরাত প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র আব্দুল্লাহ মুত্তাকি।
হেরাত প্রাদেশিক পুলিশের একজন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউসুফ সাইদি বলেছেন, দুর্ঘটনাকৃত বাসটি ইরান থেকে কাবুলের দিকে আসছিল। বাসের যাত্রীরা সবাই আফগান নাগরিক। এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে তিনি জানান, বেপরোয়া গতি এবং চালকের অসতর্কতা।
১৯৮০ এর দশকের শেষের দিকে, আফগানিস্তানে সোভিয়েত সামরিক অভিযানের সময় হাজার হাজার আফগান শরণার্থী ইরানে আশ্রয় নেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে ইরানের সরকার তাদের প্রত্যাবাসনের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশের অংশ হিসেবে জানুয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত ইতিমধ্যে ১০ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি আফগান দেশে ফিরে এসেছেন।
অতীতে, এই ধরণের দুর্ঘটনা আফগানিস্তানে বেশ সাধারণ। সম্প্রতি দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে রয়েছে, ডিসেম্বরে জ্বালানি ট্যাংকার ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে ৫২ জনের মৃত্যু। এই ঘটনার মধ্যে, সোমবারের ঘটনাটিও ছিলো বেশ বিপর্যয়কর।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, দুর্ঘটনায় সড়কের দুর্বল অবস্থা, পাহাড়ি পথের বিপজ্জনক চরিত্র আর চালকদের অসতর্কতা মূল কারণ। বেপরোয়া গতিতে চলা বাসটির সঙ্গে প্রথমে একটি মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়, এরপর কিছু মিনিটের মধ্যে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে, এবং তার ফলে একটি বড় বিস্ফোরণ হয়। ফলে ঘটনাস্থলেই অনেক ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়।
নিহতদের মধ্যে ট্রাকের চালক, তার সহকারী, মোটরসাইকেল চালক ও যাত্রী ছাড়াও অন্য ৬৭ জন বাসযাত্রী রয়েছেন। সাইদি জানিয়েছেন, এই ভয়াবহ ঘটনায় এখন মাত্র তিনজনই জীবিত বেঁচে আছেন।
সবশেষে বলা যায়, আফগানিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনা খুবই সাধারণ সমস্যা। দেশের দুর্বল সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা, পাহাড়ি পথের বিপজ্জনক অবস্থান এবং চালকদের অসতর্কতা এই ধরনের দুর্ঘটনা বাড়িয়ে দেয়।