ঢাকা | বৃহস্পতিবার | ২১শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৭শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

সরকারি জমিতে বিএনপি নেতা রানীগঞ্জে দোকান নির্মাণের অভিযোগ

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ বাজারের ফেরি ঘাটে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী সরকারি জায়গা দখল করে অগোচরে দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বিএনপি নেতা কয়েছ উদ্দিন মাস্টারের বিরুদ্ধে। নির্মাণ কাজটি তিনি বেচে নিয়েছেন গত সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতে।

জানা যায়, ২০২৪ সালের ডেসেম্বরে প্রথম শুক্রবারই হঠাৎ করে রানীগঞ্জ বাজারের ফেরি ঘাটে নদীর তীরবর্তী এই সরকারি জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ শুরু করেন কয়েছ মাস্টার। এ সময় স্থানীয় তফসিল অফিস থেকে তাঁকে দোকান নির্মাণ বন্ধের জন্য বলা হলেও তিনি আইন অমান্য করে কাজ চালিয়ে যান। পরে, ১৫ ডিসেম্বর রবিবার, জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিয়াদ বিন ইব্রাহিম ভূঞার নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসে সরকারি জায়গায় নির্মিত দোকান ভেঙে দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগে রানীগঞ্জ বাজারে ফেরী বন্দোবস্তের জন্য তিন ব্যবসায়ী আবেদন করলেও, সার্ভেয়ারের পক্ষ থেকে জায়গাটি ক্যাচম্যাপ করে দেওয়া হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রভাবশালী বিএনপি নেতা কয়েছ উদ্দিন এই জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণের জন্য তৎপর হন। তিনি গত কয়েক মাস ধরে পুনরায় দোকান নির্মাণ কাজ শুরু করেন, কর্তৃপক্ষ ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়ার মাধ্যমে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে বারবার দোকান নির্মাণ করেন। ১৫ আগস্টের সকালে তিনি আবারও অবৈধভাবে কাজ শুরু করেন। এই বিষয়টি দ্রুতই স্থানীয় বাজারে উত্তেজনা সৃষ্টি করে, বড় ধরনের সংর্ঘষের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে ইউনিয়ন বিএনপি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কয়েছ উদ্দিনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি বলেন, ‘সরকারি জায়গা দখলের বিষয়ে আমার কখনো জানা নেই, এটাই সত্যি নয়।’ অন্যদিকে, রানীগঞ্জ বাজারের সেক্রেটারি আবুল কাশেম বলেন, ‘নদীর চর দেওয়া সরকারের জমায় বিএনপি নেতা কয়েছ মাস্টার কিছু সরকারি জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করেছেন। মনে হচ্ছে, তার নিজস্ব কিছু অংশও রয়েছে সেখানে।’

পাইলগাঁও-রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়া বলেন, ‘আমরা বারবার নিষেধ করলেও যদি কেউ আইন অমান্য করে থাকেন, তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাকে টাকা দিয়ে ঠিকাদারি করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ সম্পূর্ণ অপ ascolsy। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। এর আগে এসিল্যান্ড এসে সরকারি জমি দখল মুক্ত করেন। এরপরও বিএনপি নেতার দখলের ঘটনা আমাদের নজরে আসছে।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বরকত উল্লাহ বলেন, ‘সরকারি জমি দখলের অভিযোগ শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, এ ধরনের ঘটনা স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন দপ্তরকে সতর্কতার সঙ্গে নজরদারিতে রাখার দাবি তুলে ধরছে। সরকারি সম্পদ রক্ষা ও অবৈধ দখলের প্রবৃদ্ধি রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর